খুলনা, বাংলাদেশ | ৭ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ২০শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

Breaking News

  নতুন রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের সময় বাড়ল ২২ জুন পর্যন্ত
  প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী হিসেবে নিয়োগ পেলেন সাবেক কূটনীতিক সুফিউর
  চট্টগ্রামে চলন্ত অটোরিকশায় ‘পেট্রোল বোমা’ নিক্ষেপ, দুই নারী দগ্ধ

ঝিনাইদহে স্ত্রীর নাম ব্যবহার করে শুমারির টাকা আত্মসাৎ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঝিনাইদহ

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে অর্থনৈতিক শুমারির কাজে “সুপারভাইজার” পদে নিজ স্ত্রীর নাম ব্যবহার করে সরকারি অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে পরিসংখ্যান তদন্তকারী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। উক্ত অফিসের পরিসংখ্যান তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলক কুমার দত্ত তার স্ত্রী বনি দত্তকে কাগজে-কলমে নিয়োগ দেখিয়ে “সুপারভাইজার” পদের সকল সুবিধা ভোগ ও পারিশ্রমিক আত্মসাৎ করেছেন। স্ত্রী বনি দত্ত কালীগঞ্জ উপজেলার স্থায়ী বাসিন্দা না হলেও অর্থনৈতিক শুমারি-২০২৪ এর মূল শুমারি কার্যক্রমে সরকারি শর্ত ভেঙে অস্থায়ীভাবে নিয়োগ কমিটি “সুপারভাইজার” পদে তাকে নিয়োগ দেন। তাকে উপজেলার ৭ নং রায়গ্রাম ইউনিয়নের একজন সুপারভাইজার হিসেবে দেখানো হয়।

খোঁজখবর নিয়ে জানা যায়, রায়গ্রাম ইউনিয়নে অর্থনৈতিক শুমারি কার্যক্রমে ১২ জন তথ্য সংগ্রহকারী ও ২ জন সুপারভাইজার পদে নিয়োগ পেয়েছিলেন। স্বশরীরে মাঠ পর্যায়ে নিয়োগ প্রাপ্ত ১৩ জন কাজ করলেও তারা কখনো বনি দত্তকে কাজ করতে দেখেননি। ইউনিয়নটিতে তথ্য সংগ্রহকারীরা এবং বাকি একজন সুপারভাইজার পরিসংখ্যান অফিসের সহায়তায় বানি দত্তের কাজ সম্পন্ন করে দিতেন। এমনকি কাজ শুরুর পূর্বের ট্রেনিং চলাকালীন সময়ও বনি দত্তকে দেখা যায়নি। অসৎ ও দুর্নীতিপরায়ণ স্বামী এবং অস্বচ্ছ নিয়োগ কমিটির কারণে পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের আওতায় বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো কর্তৃক বাস্তবায়নকৃত অর্থনৈতিক মূল শুমারি কার্যক্রমে কাগুজে কলমে নিয়োগ পেয়ে সরকারি অর্থ লোপাট করেন বনি দত্ত।

রায়গ্রাম ইউনিয়নের তথ্য সংগ্রহকারী মিতু দাস, আখি দাস ও জয়ার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বনি দত্ত নামে একজন সুপারভাইজার এর নাম কাগজে কলমে দেখলেও মাঠ পর্যায়ে কাজ করতে তাকে কখনো দেখেননি তারা। কাগজে তার গ্রাম উল্লেখ ছিল রায়গ্রাম, কিন্তু এ নামে রায়গ্রামে কেউ আছে কিনা তাদের জানা নেই।

উল্লেখ্য, অর্থনৈতিক শুমারিটি শুরু হয় ১০ ডিসেম্বর ২০২৪ যা চলে ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪ পর্যন্ত মোট ১৫ দিনব্যাপী। সারা দেশে ৯৫ হাজার তথ্য সংগ্রহকারী এ শুমারিতে তথ্য সংগ্রহ করেন। স্বামীর সহায়তায় ভুল ঠিকানা উল্লেখ করে কাজ না করে শুধুমাত্র কাগজে-কলমে নিয়োগ পেয়ে অর্থ আত্মসাতের ব্যাপারে কথা বলতে বনি দত্তের মোবাইল ফোনে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।

বনি দত্তের স্বামী পরিসংখ্যান তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলক কুমার দত্ত অনৈতিক উপায়ে স্ত্রীর নিয়োগ দেওয়ার ব্যাপারটি স্বীকার করে বলেন, তার নাম ব্যবহার হলেও কাজগুলো তো আমি করে দিয়েছি। এখানে সমস্যা কোথায়? স্থায়ী বাসিন্দা না হয়েও অসত্য তথ্য দিয়ে বনি দত্ত কিভাবে নিয়োগ পেলেন এমন প্রশ্নের উত্তর তিনি কৌশলে এড়িয়ে যান।

ঝিনাইদহ জেলা পরিসংখ্যান অফিসের উপ-পরিচালক আব্দুল আলিম বলেন, ওই ইউনিয়নে একজন সুপারভাইজার নিয়োগ দেয়া হয়েছিল যিনি কাজ করেননি। তার পরিবর্তে বনি দত্তকে দেওয়া হয়। স্থায়ী বাসিন্দা না হওয়া এবং কাজ না করে সরকারি অর্থ পাওয়ার ঘটনাটি অফিসিয়ালি অনিয়ম করা হয়েছে বলেও তিনি যোগ করেন। অর্থনৈতিক শুমারির নিয়োগ কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দেদারুল ইসলাম বলেন, দুর্নীতির ব্যাপারটি আমার জানা ছিল না। আমি খতিয়ে দেখছি।

খুলনা গেজেট/জেএম




খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!